ঢাকা ১০:৫৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মা-বাবার আশা পূরণে হেলিকপ্টারে চড়ে বিয়ে

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৪:৫৯:০৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩ এপ্রিল ২০২২
  • ১১৬ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ জেলার মান্দা ও মহাদেবপুর উপজেলার মাঝ দিয়ে বয়ে গেছে আত্রাই নদী। নদীর পূর্ব পাড়ে বরের বাড়ি এবং পশ্চিম পাড়ে কনের বাড়ি। সড়কপথে তাদের বাড়ির দূরত্ব প্রায় ৫ কিলোমিটার। মা-বাবার আশা পূরণে আকাশপথে হেলিকপ্টার নিয়ে বিয়ে করতে যান বর। এ সময় কনের বাড়িতে হাজারো উৎসুক জনতার ভিড় করে।

৫ কিলোমিটার দূরে বিয়ে করেছেন সবুজ নামের এক যুবক। বিয়ের বেশকিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।

 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বর আবু আহম্মেদ আশরাফ ওরফে সবুজ (৩০) নওগাঁর মান্দা উপজেলার মান্দা সদর ইউনিয়নের মেরুল্যা গ্রামের কৃষক আনিছুর রহমানের ছেলে। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মার্কেটিংয়ে বিবিএ এবং এমবিএ করে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের এরিয়া ম্যানেজার হিসেবে ময়মনসিংহ জেলায় কর্মরত। কনে আক্তার তমার (১৮) বাড়ি মহাদেবপুর উপজেলার বিনোদপুর গ্রামে। তিনি মান্দা মমিন শাহানা সরকারি কলেজের উচ্চ মাধ্যমিকের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। তার বাবা একজন ব্যাটালিয়ন।

মা-বাবার আশা পূরণে বিয়ের জন্য হেলিকপ্টার ভাড়া করেন সবুজ। পূর্বনির্ধারিত সময় অনুযায়ী শনিবার (২ এপ্রিল) দুপুরে মান্দা এসসি মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজ মাঠে নামে হেলিকপ্টার। পরে ৫ কিলোমিটার দূরে কনের বাড়ি বিনোদপুর গ্রামের পাশে পাঁঠাকাটা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে নামে। সন্ধ্যার আগেই বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষে আবারো হেলিকপ্টারে চড়ে বউ নিয়ে গ্রামের ফিরে আসেন বর সবুজ।

এ খবর ছড়িয়ে পড়লে বর ও কনের বাড়ি এলাকার আশপাশের হাজার-হাজার উৎসুক জনতা হেলিকপ্টার দেখার জন্য ভিড় করেন। তাদের বিয়ের বেশকিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ছড়িয়ে পড়েছে।

স্থানীয়রা বলেন, মানুষের সখ বা ইচ্ছার কোনো শেষ নেই। কারো সখ মাটির থালায় ভাত খাওয়া আবার কারো কাসার থালায়। পূর্বে গরু ও মহিষের গাড়ি চড়ে মানুষ বিয়ে করেছে। যা এখন অতীত। এখন আধুনিক যুগ বলে কথা। কিছু টাকা খরচ হলেও মানুষ সখ পূরণ করতে চায়। তাই তো হেলিকপ্টার নিয়ে বিয়ে করেছে। এ প্রথম কেউ হেলিকপ্টার ভাড়া নিয়ে বিয়ে করেছে। প্রচলন শুরু হয়েছে। আগামীতে হয়তো অনেকেই এমন ইচ্ছে পোষণ করবে।

বর আবু আহম্মেদ আশরাফ ওরফে সবুজ বলেন, বাবা-মা সখ ছিল হেলিকপ্টার নিয়ে বিয়ে করাতে যাবো। তাদের সখ পূরণ করতে হয়েছে। তারাও হেলিকপ্টারে উঠতে পারায় আমি খুশি।

বর সবুজের বাবা আনিছুর রহমান বলেন, আমার দুই ছেলে-মেয়ে। মেয়ে বড় ও ছেলে ছোট। আমাদের ইচ্ছে ছিল ছেলে হেলিকপ্টার নিয়ে বিয়ে করতে যাবে। আমাদের ইচ্ছা পূরণে দুই লাখ ৪০ হাজার টাকা খরচ করে হেলিকপ্টার ভাড়া নেওয়া হয়েছিল। শনিবার দুপুরে কনের বাড়ি যাই এবং বিয়ের কাজ শেষে সন্ধ্যার আগেই বউ নিয়ে ফিরে আসি। টাকা হয়তো কিছু খরচ হয়েছে তবে সখ পূরণ হয়েছে।

মেয়ের বাবা তমিজ উদ্দিন বলেন, আমার দুই ছেলে-মেয়ে। ছেলে বড় মেয়ে ছোট। আল্লাহর রহমতে বিয়ের অনুষ্ঠান ভালোভাবেই সম্পন্ন হয়েছে। দুই লাখ টাকা কাবিন করা হয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

মা-বাবার আশা পূরণে হেলিকপ্টারে চড়ে বিয়ে

আপডেট টাইম : ০৪:৫৯:০৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩ এপ্রিল ২০২২

হাওর বার্তা ডেস্কঃ জেলার মান্দা ও মহাদেবপুর উপজেলার মাঝ দিয়ে বয়ে গেছে আত্রাই নদী। নদীর পূর্ব পাড়ে বরের বাড়ি এবং পশ্চিম পাড়ে কনের বাড়ি। সড়কপথে তাদের বাড়ির দূরত্ব প্রায় ৫ কিলোমিটার। মা-বাবার আশা পূরণে আকাশপথে হেলিকপ্টার নিয়ে বিয়ে করতে যান বর। এ সময় কনের বাড়িতে হাজারো উৎসুক জনতার ভিড় করে।

৫ কিলোমিটার দূরে বিয়ে করেছেন সবুজ নামের এক যুবক। বিয়ের বেশকিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।

 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বর আবু আহম্মেদ আশরাফ ওরফে সবুজ (৩০) নওগাঁর মান্দা উপজেলার মান্দা সদর ইউনিয়নের মেরুল্যা গ্রামের কৃষক আনিছুর রহমানের ছেলে। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মার্কেটিংয়ে বিবিএ এবং এমবিএ করে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের এরিয়া ম্যানেজার হিসেবে ময়মনসিংহ জেলায় কর্মরত। কনে আক্তার তমার (১৮) বাড়ি মহাদেবপুর উপজেলার বিনোদপুর গ্রামে। তিনি মান্দা মমিন শাহানা সরকারি কলেজের উচ্চ মাধ্যমিকের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। তার বাবা একজন ব্যাটালিয়ন।

মা-বাবার আশা পূরণে বিয়ের জন্য হেলিকপ্টার ভাড়া করেন সবুজ। পূর্বনির্ধারিত সময় অনুযায়ী শনিবার (২ এপ্রিল) দুপুরে মান্দা এসসি মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজ মাঠে নামে হেলিকপ্টার। পরে ৫ কিলোমিটার দূরে কনের বাড়ি বিনোদপুর গ্রামের পাশে পাঁঠাকাটা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে নামে। সন্ধ্যার আগেই বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষে আবারো হেলিকপ্টারে চড়ে বউ নিয়ে গ্রামের ফিরে আসেন বর সবুজ।

এ খবর ছড়িয়ে পড়লে বর ও কনের বাড়ি এলাকার আশপাশের হাজার-হাজার উৎসুক জনতা হেলিকপ্টার দেখার জন্য ভিড় করেন। তাদের বিয়ের বেশকিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ছড়িয়ে পড়েছে।

স্থানীয়রা বলেন, মানুষের সখ বা ইচ্ছার কোনো শেষ নেই। কারো সখ মাটির থালায় ভাত খাওয়া আবার কারো কাসার থালায়। পূর্বে গরু ও মহিষের গাড়ি চড়ে মানুষ বিয়ে করেছে। যা এখন অতীত। এখন আধুনিক যুগ বলে কথা। কিছু টাকা খরচ হলেও মানুষ সখ পূরণ করতে চায়। তাই তো হেলিকপ্টার নিয়ে বিয়ে করেছে। এ প্রথম কেউ হেলিকপ্টার ভাড়া নিয়ে বিয়ে করেছে। প্রচলন শুরু হয়েছে। আগামীতে হয়তো অনেকেই এমন ইচ্ছে পোষণ করবে।

বর আবু আহম্মেদ আশরাফ ওরফে সবুজ বলেন, বাবা-মা সখ ছিল হেলিকপ্টার নিয়ে বিয়ে করাতে যাবো। তাদের সখ পূরণ করতে হয়েছে। তারাও হেলিকপ্টারে উঠতে পারায় আমি খুশি।

বর সবুজের বাবা আনিছুর রহমান বলেন, আমার দুই ছেলে-মেয়ে। মেয়ে বড় ও ছেলে ছোট। আমাদের ইচ্ছে ছিল ছেলে হেলিকপ্টার নিয়ে বিয়ে করতে যাবে। আমাদের ইচ্ছা পূরণে দুই লাখ ৪০ হাজার টাকা খরচ করে হেলিকপ্টার ভাড়া নেওয়া হয়েছিল। শনিবার দুপুরে কনের বাড়ি যাই এবং বিয়ের কাজ শেষে সন্ধ্যার আগেই বউ নিয়ে ফিরে আসি। টাকা হয়তো কিছু খরচ হয়েছে তবে সখ পূরণ হয়েছে।

মেয়ের বাবা তমিজ উদ্দিন বলেন, আমার দুই ছেলে-মেয়ে। ছেলে বড় মেয়ে ছোট। আল্লাহর রহমতে বিয়ের অনুষ্ঠান ভালোভাবেই সম্পন্ন হয়েছে। দুই লাখ টাকা কাবিন করা হয়েছে।